সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা। ঈদ মুবারাক। সারা বিশ্বের মুসলমাদের জাতি এবং ভাষা ভিন্ন হলেও কিন্তু সবাই ঈদ মোবারাক কথাটি ব্যবহার করেই ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করে। এটা সার্বজনীন। কিন্তু তুর্কিরা এই কথাটির পরিবর্তে নিজস্ব ভাষায় ঈদের শুভেচ্ছা জানায়। Bayraminiz Mubarek Olsun.   আজ আমরা তুর্কিদের ঈদের কেনাকাটা নিয়ে আলোচনা করব। তুর্কিরাও ঈদের আগে আমাদের মতই কেনাকাটা করতে ছুটে যায় বাজারে দোকানে শপিং মলে? 
শপিং মল গুলোতে এবং চেইনশপগুলোতে ঈদে ব্যপক ছাড় ও বিভিন্ন ধরণের অফার দেয়া হয় । তাই মানুষ এই সময় শপিং মলে গিয়ে কেনাকাটা করে। বিশেষ করে পোশাক কিনতে শপিং মলে যায় মানুষ। আর গত দুই বছর পর এই প্রথম মাস্ক ছাড়া চলাফেরা এবং কেনাকাটার সুযোগ পেয়ে মানুষ মন খুলে ঘোরাফেরা করছে। চকলেট,, মিষ্টি, চাল, ডাল, মসলা গোস্ত বিক্রি হয় এমন জায়গায় মানুষের সমাগম চোখে পড়ার মত। আঙ্কারার সবচেয়ে বিখ্যাত এবং সবচেয়ে পুরাতান মসলার বাজার Ulus Halı। আমরা সেখানে গিয়ে যে ভিড় দেখতে পাই তা বলার মত না। তুর্কিরা সবচেয়ে বেশি কিনছে চকলেট। বিভিন্ন রঙের বিভিন্ন স্বাদের চকলেট। ঈদের সময় শিশুদের চকলেট দেয়ার রীতি আছে এখানে। পরিচিত অপরিচিত সব শিশুকেই আপনি চকলেট দিতে পারেন। আবার ঈদের দিন আপনার এলাকার সব শিশুরাই আপনার বাসার কড়া নেড়ে ঈদ মোবারাক জানাবে। তখনও তাদেরকে চকলেট দিতে হয়। তাই ঈদের সময় চকলেট বাসায় থাকতেই হবে। 
আরেকটা মিষ্টান্ন হচ্ছে বাকলাভা। এই বাকলাভা ছাড়া ঈদ যেন অসম্পূর্ণ থেকে যায়। তাই ঈদের আগে বাকলাভা কেনার ভিড় পরে। আমরা এই যে বাকলাভা বিক্রির দোকানটিতে এসেছি এখানে চারিদিকে এতো ভিড় যে আপনার সিরিয়াল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে। বাকলাভা ৫ থেকে ৭ দিন পর্যন্ত অনায়াসেই রাখা যায়। নষ্ট হয় না। তাই ঈদের আগে থেকেই অনেকে বাকলাভা কিনে রাখেন। অনেকে আবার অর্ডার দিয়ে রাখেন ঈদের দিন সকালে নিয়ে যান। অনেকে আবার বাসায়ই তৈরি করেন ঈদের বাকলাভা। 
বাকলাভার পরে আমরা এসেছি একটি মসলার দোকানে। আঙ্কারার এই উলুস এলাকার সবচেয়ে বিখ্যাত মসলার দোকানে আছি আমরা। দোকানটির নাম hacibaba baharat। এখানে সবধরনের মসলা পাওয়া যায়। তুর্কিদের পাশাপাশি প্রচুর বিদেশীরাও এখান থেকেই মসলা কিনতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। এখানের কর্মচারীদের অমায়িক আচরণ আর মসলাগুলোর বাংলায় নাম জানার কারণে এই দোকানটি বাংলাদেশীদের কাছেও অনেক পরিচিত। বাসমতী চাল, কাসুন্দি, জয়ফল, জয়থ্রি সহ সব ধরণের মসলাই এখানে পাওয়া যায়। ঈদের আগে মসলার দোকানগুলোতে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মত। কারণ ঈদের দিন তুর্কিরা গোস্তের কাভুরমা বা ভুনা গোশত খেতে পছন্দ করে। একারণে গোস্তের দোকানেও ভিড় ছিল চোখে পড়ার মত। এখানে পশুর সব অংশই বিক্রি করা হয়। পা থেকে শুরু করে কলিজা ভুরি সবকিছুই পাওয়া যায় এখানে। 
তবে ঈদের আগে মাছের দোকানে তেমন ভিড় থাকে না। 
আর রুটি কেনার জন্যও আছে প্রচুর ভিড়।
ঈদের সকালের নাস্তায় তুর্কিদের আরেকটি জনপ্রিয় খাবার হলো পাস্তিরমা বা বেকন। সাথে সুজুক সালাম, সসিস, পনির, জয়তুন আর মধু তো থাকবেই। তাই এগুলো বিক্রির দোকানেও ব্যপক ভিড় থাকে।  

আমরা আমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী কেনাকাটা করে। উলুস থেকে বাসায় ফিরলাম।