বছর খানের আগে নার্গানো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে আজারবাইজান এবং আর্মেনিয়ার মধ্যে সংঘটিত যুদ্ধের পাশাপাশি লিবিয়া, আফগানিস্তান, ইরাক, সিরিয়া এবং অতি সাম্প্রতিক সময়ে ইউক্রেন যুদ্ধে একেবারে হালকা ও ক্ষুদ্র আকারের অস্ত্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশেষ করে প্যানপ্যাড এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, কমব্যাড এণ্ড কামিকাজি ড্রোন, এন্টি-ট্যাংক মিসাইল এবং এন্টিশীপ মিসাইলের কাছে অপেক্ষাকৃত বড় আকারের এবং ভারি ট্যাংক, আর্টিলারী সিস্টেম এবং এমনকি বৃহৎ আকারের ক্রুজার শীপ পর্যন্ত ধ্বংস কিংবা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।

তাই সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ঘটে যাওয়া যুদ্ধের পরিস্থিতি বিবেচনায় বিশ্বের স্বল্প আয়ের দেশগুলোকে তাদের সামরিক ও প্রতিরক্ষা খাত শক্তিশালীকরণ এবং আধুনিকায়নে নতুন করে ভাবতে বাদ্ধ করেছে। এখানে শুধুমাত্র ভারি ও অত্যন্ত ব্যয়বহুল ডিফেন্স সিস্টেমের পিছনে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ব্যয় না করে এর বিকল্প হিসেবে যুগের উপযোগী হালকা ও উন্নত প্রযুক্তির ক্ষুদ্র অস্ত্র এবং সামরিক সাজ সরঞ্জাম, কমব্যাট এণ্ড নন-কমব্যাট ড্রোন, ম্যানপ্যাড এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, এন্টিশীপ, (এমএলআরএস) মিসাইল ক্রয়, সংগ্রহ কিংবা সম্ভব হলে নিজস্বভাবে উৎপাদনের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া উচিত।

রাশিয়া এবং ইউক্রেনের যতগুলো যুদ্ধবিমান এবং হেলিকপ্টার আকাশে ধ্বংস হয়েছে, তার একটি বড় অংশ ধ্বংস করা হয়েছে ম্যানপ্যাড এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ব্যবহার করে। এদিকে চলমান তীব্র যুদ্ধের মুখে বন্ধুদেশ ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তার অংশ হিসেবে খুব সম্ভবত শতাধিক শর্ট রেঞ্জের মিস্ত্রাল এয়ার ডিফেন্স মিসাইল সরবরাহ করে নরওয়ে। যার পরীক্ষিত হীট পয়েন্টে এ্যাটাক একিউরিসি ৯২%। অবশ্য এর আগে ইউক্রেনকে ৪ হাজারের অধিক এন্টি ট্যাংক গাইডেড মিসাইলও দিয়েছিল নরওয়ে।

তাছাড়া আমেরিকার জ্যাভলিন এন্টি ট্যাংক মিসাইল দিয়ে ইতোমধ্যেই যুদ্ধক্ষেত্রে শতাধিক রাশিয়ান সামরিক যান ও ট্যাংক ধ্বংস করেছে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী। যদিও রাশিরার নতুন যুদ্ধ কৌশল ও দক্ষ সমর নীতির কারণে যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী।

বর্তমানে আবার নতুন প্রযুক্তির লেজারগানকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে বিশ্বের প্রথম সারির সামরিক শক্তিধর দেশগুলো। গত ২০২১ সালের মার্চ মাসের দিকে লিবিয়ায় হাফতার বিদ্রোহী সামরিক মিলিশিয়াদের বিরুদ্ধে প্রথম সরাসরি কোন লেজার গান বা ওয়েপন্সের সফলভাবে প্রয়োগ করে তুরস্ক। সেই সময়ে খুব সম্ভবত সংযুক্ত আরব আমিরাতের গোপন কোন সামরিক ঘাঁটি থেকে লিবিয়ায় আসা চীনের তৈরি একটি উইং লুং-২ কমব্যাট ড্রোনকে ভূমিতে থাকা তুর্কী লেজার গান দিয়ে সফলভাবে আকাশেই ধ্বংস করে দেয়া হয়। তাই একেবারে সীমিত পরিসরে এবং পরীক্ষামুলক হলেও এটি ছিল ভবিষ্যতের অস্ত্র লেজার গানের প্রথম কোন সফল ব্যবহার প্রত্যক্ষ করল বিশ্ববাসী। রাশিয়াও কিন্তু এখন এক রকম নিয়মিতভাবেই যুদ্ধক্ষেত্রে লেজারগান ব্যবহার শুরু করে দিয়েছে।

এখানে প্রকাশ থাকে যে, বিশ্ব মানের এবং আধুনিক প্রযুক্তির ক্ষুদ্র অস্ত্র এবং ডিফেন্স সিস্টেম ডিজাইন ও তৈরিতে বিশ্বে আমেরিকা এবং রাশিয়ার মতো সুপার পাওয়ার দেশগুলোর পাশাপাশি চীন, তুরস্ক, নরওয়ে, দক্ষিণ কোরিয়া, ইসরায়েল, জাপান, সুইডেন, যুক্তরাজ্য,স্পেন, জার্মান, ভারত এবং ইতালীত মতো দেশগুলো ব্যাপকভাবে এগিয়ে গেছে।

Sherazur Rahman