গত ২০শে মার্চ জাপানের ‘কাওয়াসাকি হেভি ইন্ডাস্ট্রিজ’ (জাপানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়) জাপানিজ সেলফ ডিফেন্স ন্যাভাল ফোর্সের কাছে তাদের তৈরি নতুন প্রজন্মের লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি সজ্জিত ‘তাইজি ক্লাস’ (Taigei-class) সাবমেরিন হস্তান্তর করেছে। তার সাথে এটি হতে যাচ্ছে বিশ্বের প্রথম কোন লিথিয়ান আয়ন ব্যাটারি ব্যবহৃত সাবমেরিন। কাওয়াসাকি এটি প্রথম তৈরি শুরু করে ২০১৯ সালে এবং প্রথম ২০২১ সালের ১৪ই অক্টোবর লঞ্চড করা হয়।

যদিও এটি কিন্তু একেবারে ব্যাটারি দ্বারা চালিত কোন ইলেক্ট্রিক মোটর সাবমেরিন নয়। বরং এতে অত্যন্ত শক্তিশালী হাইব্রিড ডিজেল ইকেক্ট্রিক ইঞ্জিন ইনস্টল করা হয়েছে। তার সাথে থাকা লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি এনার্জি সংরক্ষণ করে সমুদ্রের গভীরে দীর্ঘদিন সাবমেরিনটিকে লুকিয়ে থাকতে এবং তার গোপন ন্যাভাল কমব্যাট মিশন পরিচালনা করতে সহায়তা করবে। তাছাড়া যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে মেইন ডিজেল ইলেক্ট্রিক ইঞ্জিন বন্ধ রেখে লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি এনার্জি ব্যবহার করে দীর্ঘদিন সাগরের গভীরে নিরব ঘাতক হিসেবে লুকিয়ে থাকার জন্য শত্রু পক্ষের রাডার ও সোনার সিস্টেমে এর নয়েজ এন্ড হীট ট্রেসিং করাটা এক কথায় অসম্ভব হয়ে যাবে।

জাপানিজ সেলফ ডিফেন্স ন্যাভাল ফোর্স এর ডাক নাম রেখেছে “হাকুইগী’ (Hakugei) বা সাদা তিমি। কাওয়াসাকি বর্তমানে এই নতুন সিরিজের ২টি ‘তাইজি ক্লাস’ (Taigei-class) সাবমেরিন হস্তান্তর করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে চীন, রাশিয়া এবং উত্তর কোরিয়ার ক্রমবর্ধমান সামরিক হুমকী মোকাবেলায় আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে এরুপ আরো ৬টি উচ্চ প্রযুক্তির এ্যাটাক সাবমেরিন তৈরি করবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাপান।

৩ হাজার টন ওজনের এই সাবমেরিনের দৈর্ঘ্য ৮৪ মিটার, বিম ৯.১ মিটার ড্রটস ১০.৪ মিটার। এর সর্বোচ্চ গতি ২০ নটিক্যাল মাইল বা প্রতি ঘন্টায় ৩৭ কিলোমিটার। এটি এক সাথে ৩০টি হারপুন এন্টিশীপ ও টাইপ-১৮ টর্পেডো বহণ করতে পারে। এর পার ইউনিট কস্ট ৬৩৫ মিলিয়ন ডলার। জাপানের সেলফ ডিফেন্স ন্যাভাল ফোর্সের সাবমেরিন ফ্লীটে মোট সাবমেরিন রয়েছে ২৩টি। যার মধ্যে ১২টি ‘সুরিউ’ ক্লাস, ৯টি ‘ওয়াসিও’ ক্লাস এবং ২টি ‘তাইজি’ ক্লাস ডিজেল ইলেক্ট্রিক এ্যাটাক সাবমেরিন অপারেশনাল রয়েছে।
Sherazur Rahman