【我们领证啦!】B-001F

আজ শুক্রবার ৯ই ডিসেম্বর চীনের নিজস্ব প্রযুক্তির তৈরি একটি সি-৯১৯ বেসামরিক যাত্রী পরিবহণ বিমান আনুষ্ঠানিকভাবে চায়না ইস্টার্ন এয়ারলাইন্সের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এর রেজিস্ট্রেশন নাম্বার বি-৯১৯এ। আর এর মাধ্যমে চীনের তৈরি প্রথম কোন প্যাসেঞ্জার জেট লাইনার যাত্রী নিয়ে আকাশে উড্ডয়ন করে এক নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করতে যাচ্ছে। তবে আশা করা হচ্ছে যে, সি-৯১৯ প্যাসেঞ্জার জেট লাইনারের অফিসিয়াল বানিজ্যিক যাত্রা শুরু হবে আগামী ২০২৩ সালের বসন্তের শুরুর দিকে। তাছাড়া চায়না ইস্টার্ন এয়ারলাইন্সে প্রায় ৮০০টি বিভিন্ন ক্যাটাগরির যাত্রী পরিবহন বিমান রয়েছে।  

চীনের কমার্শিয়াল এয়ারক্রাফট কর্পোরেশন অব চায়না (সিওএমএসি) লিমিটেড এর তৈরি সি-৯১৯ সিরিজের যাত্রী পরিবহণ বিমানটির প্রযুক্তিগত সক্ষমতা ও মান কতটুকু ভালো হবে তা কিন্তু এখনো পর্যন্ত চীনের বাহিরে নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। তবে গত মাসে অনুষ্ঠিত হওয়া চীনের ১৪তম আন্তর্জাতিক এভিয়েশন এন্ড এ্যারোস্পেস মেলা-২০২২ এ প্রায় ৩০০টি ন্যারো সেপের সি-৯১৯ সিরিজের প্যাসেঞ্জার বিমানের অর্ডার দিয়েছে দেশটি অভ্যন্তরীন রুটে বিমান পরিচালনাকারী এয়ার লাইনস লিজিং কোম্পানিগুলো।

চীনের সি-৯১৯ইআর সিরিজের যাত্রী পরিবহণ বিমানের দৈর্ঘ্য ৩৮.৯ মিটার এবং উইন্সপেন ৩৩.৬ মিটার। এর স্টান্ডার্ড পেলোড ক্যাপাসিটি ১৫ টন এবং এর স্টান্ডার্ড রেঞ্জ ৫,৫৭৬ কিলোমিটার। আকাশে এই বিমানের উড়ে চলা ও শক্তি উৎপাদনের জন্য ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের যৌথভাবে তৈরি ২টি সিএফএম ইন্টারন্যাশনাল এলইএপি-১সি সিরিজের শক্তিশালী টার্বোফ্যান ইঞ্জিন ব্যাবহার করা হয়েছে। এটিকে ১২ হাজার ১০০ মিটার উচ্চতায় উড্ডয়ন করার উপযোগী করে ডিজাইন করা হয়েছে।

এটিকে ১৬৪টি সিটের ক্যাপাসিটি অনুযায়ী ডিজাইন করেছে চীনের কমার্শিয়াল এয়ারক্রাফট কর্পোরেশন অব চায়না (সিওএমএসি) এভিয়েশন ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি। যার মধ্যে ৮টি বিজনেস ক্লাস এবং ১৫৬টি ইকোনোমী ক্লাস আসন অনুযায়ী সজ্জিত করা হয়েছে। এর ম্যাক্সিমাম রেঞ্জ হচ্ছে ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার কিলোমিটারের কাছাকাছি। অনেকটাই খরচ সাশ্রয়ী ও স্বল্প মূল্যের এই ন্যারো সেপের সি-৯১৯ বিমান দিয়ে অদূর ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক যাত্রী পরিবহন বিমানের বাজার দখলে অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে এগিয়ে যাচ্ছে রাড জায়ান্ট চীন।

চীনের মনে করে যে, তাদের নিজস্ব প্রযুক্তির সি-৯১৯ মিডিয়াম প্যাসেঞ্জার এয়ার লাইনারটি দিয়ে অদূর ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক বিমান বানিজ্যে আমেরিকার বোয়িং এবং ইউরোপের এয়ারবাসের একচেটিয়া সিন্ডিকেট ভেঙ্গে ফেলতে সক্ষম হবে। তাছাড়া বোয়িং ৭৩৭ এবং এয়ারবাস এ-৩২০ সিরিজের যাত্রী পরিবহণ বিমানের সাথে পাল্লা দিয়ে সারা বিশ্বে নিজের যোগ্য স্থান করে নিবে।

তবে চীনের অভ্যন্তরীন রুটে সি-৯১৯ সিরিজের বিমানটি খুব সহজেই জেয়গা দখল করে নিবে বলে মনে করা হলেও আন্তর্জাতিক বাজারে এত সহজে স্থান নাও পেতে পারে। বিশেষ করে আমেরিকা ও ইউরোপের বিমানবন্দরগুলোতে চীনের নিজস্ব প্রযুক্তির সি-৯১৯ বিমানকে ল্যান্ডিং এর সার্টিফিকেট বা অনুমোদন পাওয়াটা খুব একটা সহজ কিছু হবে না। তবে চীনের অভ্যন্তরীন এয়ার রুটে বিপুল পরিমাণ যাত্রী পরিবহন বিমানের চাহিদা থাকায় নিজ দেশেই বড় ধরণের ব্যবসা করার সুযোগ মোটেও হাতছাড়া করবে বলে মনে হয় না।

সিরাজুর রহমান (Sherazur Rahman), সহকারী শিক্ষক ও লেখক, সিংড়া, নাটোর, বাংলাদেশ। sherazbd@gmail.com